মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করে দেশ ছাড়ল ১২ বছরের শিশু!

কিশোর বাংলা প্রতিবেদন: ‘হোম অ্যালোন’ ছবির কথা মনে আছে? হলিউডের ওই ছবিতে আট বছর বয়সের কেভিন ম্যাকক্লাস্টার ভুলবশত পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। এরপর বাবা-মার ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে পাঁচ তারকা হোটেলে গিয়ে কেভিনের সে কী আনন্দ! এবার এমনই এক কাণ্ড ঘটিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার ১২ বছরের এক শিশু। মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করে দেশ ছেড়ে চলে গিয়েছিল সে। কোনো অভিভাবক ছাড়াই বাবা-মার ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে ওই শিশুটি অস্ট্রেলিয়া থেকে ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপে চলে যায়।
ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে অস্ট্রেলিয়ার পুলিশ। শিশুটি কীভাবে বাবা-মার ক্রেডিট ব্যবহার করে উড়োজাহাজের টিকিট কাটল এবং একা একা ইন্দোনেশিয়া গেল—সে বিষয়টি তদন্ত করে দেখবে পুলিশ।
নিজের পাসপোর্ট ও স্কুলের পরিচয়পত্র দেখিয়ে উড়োজাহাজে উঠেছিল ছেলেটি। মোট নয় দিন নিখোঁজ ছিল ১২ বছর বয়সের ছেলেটি। সে বলেছে, ‘তারা শুধু আমার স্কুলের পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট দেখতে চেয়েছিল। এ বিষয়টি অসাধারণ ছিল, কারণ আমি অ্যাডভেঞ্চারে যেতে চেয়েছিলাম।’
ছেলেটি সিডনিতে বাবা-মার সঙ্গে থাকত। মায়ের সঙ্গে ঝগড়া হওয়ার পর বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় সে। ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে উড়োজাহাজের টিকিট কেটে প্রথমে অস্ট্রেলিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর পার্থে যায় ছেলেটি। সেখানকার বিমানবন্দর থেকে ওঠে ইন্দোনেশিয়ার উড়োজাহাজে।
ছেলেটির মা এমা বলেন, ‘সে কখনো “না” শুনতে পছন্দ করে না। আর তা নিয়েই মন কষাকষি। এরপর ইন্দোনেশিয়া চলে যায় সে। আমাদের দেশের ব্যবস্থায় কিছু সমস্যা আছে। এভাবে যাওয়া খুবই সহজ।’ উড়োজাহাজে শিশুদের ভ্রমণের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপের দাবি জানান এমা।
এর আগে বাবা-মার সঙ্গে একবার ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপে বেড়াতে গিয়েছিল শিশুটি। তার মা বলেছেন, ছেলে হারিয়ে যাওয়ার পর বারবার অস্ট্রেলিয়ার কর্তৃপক্ষের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু তাৎক্ষণিক কোনো সুফল পাওয়া যায়নি।
ছেলেটি আরও জানিয়েছে, টিকিট কাটার পর এয়ারলাইন কোম্পানির কর্মীরা তাকে উড়োজাহাজে উঠতে কোনো বাধা দেয়নি। উল্টো তাঁরা জানিয়েছিলেন, দেশের বাইরে যেতে মা-বাবার অনুমতি নেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।
বালি দ্বীপে চার দিন কাটিয়েছিল ছেলেটি। সেখানে একটি হোটেল উঠেছিল সে। একটি স্কুটার ভাড়া করে পুরো দ্বীপে চষে বেড়িয়েছে ছেলেটি। পরে এই ভ্রমণের ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপলোড করলে, ছেলেটির এক বন্ধু তার মাকে এ ব্যাপারে জানায়। এই ভ্রমণে ৬ হাজার ১০০ ডলার খরচ করেছে ছেলেটি। পুরোটাই গেছে মা-বাবার পকেট থেকে।