বুদ্ধিমত্তায় আইনস্টাইন ও হকিংকে ছাড়িয়ে শিশু অর্ণব

কিশোর বাংলা ডেস্ক : মাত্র ১১ বছর বয়স তার। অথচ এই বয়সেই বিশ্বসেরা বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন ও স্টিফেন হকিংকে ছাড়িয়ে বুদ্ধিমত্তায়। সে এতোটাই বুদ্ধিমান যে বুদ্ধিমত্তার পরীক্ষা ‘মেনসা টেস্টে’ (MENSA IQ TEST) অর্থাৎ  বুদ্ধিমত্তায় বিশ্বসেরা বিজ্ঞানী আইনস্টাইন ও স্টিফেন হকিংয়ের চেয়েও দু’পয়েন্ট বেশি পেয়ে এগিয়ে রয়েছে ভারতীয় বংশোদ্ভূত অর্ণব শর্মা।

ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, মেনসা টেস্ট নামের পরীক্ষাটি বুদ্ধিমত্তা মাপার জন্য অন্যতম এক পরীক্ষা। খুব কঠিন বলে এর ‘কুখ্যাতি’ রয়েছে।

মৌখিক যুক্তির সক্ষমতাকে গুরুত্ব দিয়ে পরীক্ষাটির প্রাথমিক ফল নির্ধারণ করা হয়। যেখানে যুক্তরাজ্যের শীর্ষস্থানীয় এক শতাংশ মেধাবীদের মধ্যে নিজের অবস্থান করে নিয়েছে অর্ণব।

সে স্কোর করেছে ১৬২। অথচ পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার আগে প্রশ্ন সম্পর্কে কোনো ধারণা ছিল না তার। আত্মবিশ্বাসকে পুঁজি করেই কয়েক সপ্তাহ আগে পরীক্ষায় বসে ও।

মেনসার পক্ষে একজন মুখপাত্র অর্ণবের কৃতিত্বের প্রসংশা করে বলেন, সে যে নম্বর পেয়েছে, তা খুব কম মানুষই অর্জন করতে পেরেছে।

অর্ণব তার মা-বাবার সঙ্গে যুক্তরাজ্যের দক্ষিণাঞ্চলের রিডিং শহরে থাকে। পড়াশোনা করছে ক্রসফিল্ডস স্কুলে। এরই মধ্যে ইটন কলেজ ও ওয়েস্ট মিনিস্টারে নির্বাচিত হয়েছে সে। এ দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই খুবই প্রতিযোগিতাপূর্ণ।

বেশিরভাগ প্রাপ্ত বয়স্কদের সঙ্গে পরীক্ষা দিতে হয়েছে জানিয়ে অর্ণব বলে, ‘আমি স্যালভেশন সেন্টারে পরীক্ষা দিয়েছি। মেনসা টেস্ট বেশ কঠিন। আমি এতে উত্তীর্ণ হওয়ার আশা করিনি। আমার পরীক্ষাটি শেষ করতে আড়াই ঘণ্টার মতো সময় লেগেছিল। সারা পৃথিবী থেকে এই পরীক্ষায় মাত্র আট জন অংশগ্রহণ করেছিল। আমি ছাড়া আর সকলেই সকলেই ছিল প্রাপ্ত বয়স্ক।

এতে ঘাবড়ে যায়নি অর্নব। সে বলেছে, ’আমার কোনো প্রস্তুতি ছিল না। কিন্তু আমি কোনো স্নায়বিক চাপে ভুগিনি। পরীক্ষার ফল শুনে বাবা-মা বিস্মিত হয়েছেন ঠিকই। তবে তারা বেশ খুশিও হয়েছেন।’

এ নিয়ে অর্ণবের মা মিশা ধামিজা শর্মা বলেন, ‘পরীক্ষার পুরোটা সময় আমি প্রার্থনা করেছি। ভাবছিলাম, কী জানি কী হয়! কারণ, এর আগে মেনসা টেস্টের কোনো প্রশ্নপত্রও ও দেখেনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘দেড় বছর বয়সে আমি তার দাদা-দাদিকে দেখতে ভারতে নিয়ে গিয়েছিলাম।

তারা বলেছিলেন অর্ণব পড়াশোনার সাথে খুব ভালো কাজ করতে যাচ্ছে। আমি বিশ্বাস করিনি, ভেবেছিলাম যে তারা আমাকে খুশি করতে এসব বলছে। কিন্তু তা সঠিক হলো।

মিশা ধামিজা জানান, আড়াই বছর বয়সেই একশ পর্যন্ত গুণতে পারতো অর্ণব। ছেলের প্রতিভা সম্পর্কে তখনই তারা আঁচ করতে পেরেছিলেন।

শুধু গণিতে নয় নাচ এবং গানেও অর্ণব দক্ষ। তার মধ্যে ভৌগোলিক জ্ঞানও রয়েছে। সে বিশ্বের সব রাজ্যের নাম বলতে পারে। কোডিং, ব্যাডমিন্টন, পিয়ানো, সাঁতার তার শখ।

মেনসা সোসাইটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৪৬ সালে। এর প্রতিষ্ঠাতা অক্সফোর্ডের বিজ্ঞানী ল্যানসেলট লিওনেল ওয়্যার ও আইনজীবী রোল্যান্ড বেরিল।

মেনসা অনুমোদিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে নির্দিষ্ট জনসংখ্যার শীর্ষ দুই শতাংশ বুদ্ধিমান মানুষকে এর সদস্যপদ দেওয়া হয়। এর লক্ষ্য, বিকাশের জন্য মানুষের বুদ্ধি সনাক্ত এবং বিকশিত করা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *