ছোটবেলা থেকেই সংস্কৃতির চর্চা
কিশোর বাংলা প্রতিবেদন: একটি শিশুকে ছোটবেলা থেকে যা শিক্ষা দেওয়া হয় সে সেভাবেই গড়ে উঠে। শিশু সম্পর্কে আমাদের আবেগ যতটুকু, দায়িত্ববোধ আসলে ততটুকু গভীর নয়। শুধুমাত্র সঠিক পরিচর্যা করতে পারলেই সেই শিশু একদিন একজন ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে উঠে, সমাজের জন্য ভুমিকা রাখে।
শিশুরা যদি সুস্থ্ সংস্কৃতির চর্চা করে, তবে অবশ্যই সেটা তার সঠিক মেধাবিকাশে কাজে লাগবে। সঠিক মেধাবিকাশের মাধ্যমেই একটা শিশু ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে উঠে। দিন দিন সুস্থ্ সংস্কৃতির চর্চা কমে যাচ্ছে। আমরা বিভিন্ন অপসংস্কৃতির দিকে আকৃষ্ট হচ্ছি। যা ছোটবেলা থেকে শিশুদের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। টিভি খুললেই দেখা যায় ভারতীয় চ্যানেলের ছড়াছড়ি। এসব ভারতীয় অপসংস্কৃতি আমাদের সংস্কৃতিতে ঢুকে পড়ছে।
ইদানীং দেখা গেছে বেশীরভাগ শিশুরাই বাংলার চাইতে হিন্দীতে কথা বলতে বেশি পছন্দ করে। অর্থাৎ, আমরা বিদেশী সংস্কৃতির প্রতি বেশী ঝুকে পড়ছি, যা আমাদের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। শিশুদেরকে যা শেখানো হয় তারা তাই শেখে।
বাংলাদেশে উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তানদের ছোটবেলা থেকেই ভর্তি করে দেয়া হয় ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে । ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল কোন সমস্যা নয় , সমস্যা গুলো তৈরি করছে স্কুল কতৃপক্ষ যারা স্কুলে ইংরেজি ভাষা শিক্ষা দিচ্ছে ঠিকই কিন্তু বাংলা যেটা আমাদের মাতৃভাষা এবং রাষ্ট্রীয় ভাষা সেই ভাষার দক্ষতার প্রতি তাদের কোন গুরুত্ব দিতে দেখছি না । ফলাফল কি হচ্ছে , আমার বাচ্চাটা ইংরেজিতে খুব ভালো কিন্তু বাংলাটা ধরতে পারছে না ।
আমাদের ভাষা সংগ্রামের কথা শিশুদের জানা উচিত, আমাদের এই উন্নত সংস্কৃতির কথা তাদের জানা উচিত । হ্যাঁ,অভিভাবকেরাই পারেন এটা তাদের সামনে তুলে ধরতে । শিশুদের এটা জানাতে হবে যে, বাংলা ভাষাকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন করছে বিশ্বের ১৪০টির ও বেশি দেশ । সেখানে আমরা বাংলাকে যথাযথ মর্যাদা দিতে অক্ষম হলে সেই লজ্জা আমাদেরই ।
শিশুর পরিপূর্ণ বিকাশে নিজের সংস্কৃতিকে অবশ্যই জানতে হবে , চর্চা করতে হবে ও ধারন করতে হবে । পিতামাতা শিশুর হাত করে পহেলা বৈশাখের সকালে মঙ্গল শোভা যাত্রায় অংশ গ্রহন করবে , রমনার বটমূলে গিয়ে এসো হে বৈশাখ গান শুনবে , পান্তা ইলিশ খাবে ,তবেই তো শিশুটির মনে সংস্কৃতির স্থায়ী বিকাশ ঘটবে ।