এই কিশোরদের হারাতে দেবেন না সালাউদ্দিন

কিশোর বাংলা প্রতিবেদন : থিম্পুতে বাংলাদেশ-নেপাল যুব দলের ম্যাচটি শুরু হতে তখনো ঘণ্টা চারেক বাকি। এই কিশোরদের কোনভাবেই হারাতে দিতে চান না বাফুফে সভাপতি কাজী মোঃ সালাউদ্দিন। তিনি জয়ের স্বপ্নে বিভোর।

গতকাল  সোমবার বিকেলে বাফুফে ভবনে নিজ কক্ষে বসে তখন বারবার ভুটানের রাজধানীর কথাই বলছিলেন কাজী মো. সালাউদ্দিন। বলছিলেন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বাসে বাফুফে ভবনে আসতে থাকা অনূর্ধ্ব-১৬ দলটির কথাও। যে দলটি একদিন আগে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে কাতারকে হারিয়ে।

কিন্তু বাফুফে সভাপতি বেশি ভাবছিলেন থিম্পু নিয়ে। কিশোর ফুটবলররা তো চমক দেখিয়ে আসল, তাদের নিয়ে কী ভাবছেন? ‘আজকের (সোমবার) দিনটা পার হতে দিন, শেষ হোক থিম্পুতে নেপালের বিপক্ষে ম্যাচটি। এ ম্যাচটি নিয়ে টেনশনে আছি। এ মুহূর্তে আমার ফোকাস নেপালের বিপক্ষে যুব দলের ম্যাচটির প্রতি। তারপর বয়সভিত্তিক দল নিয়ে আমাদের পরিকল্পনাগুলো বলব।’

পরিকল্পনাগুলো কী? ‘বললাম তো বাংলাদেশ-নেপাল ম্যাচটি যাক’-বোঝা গেল কয়েক ঘণ্টা পর থিম্পুর লড়াই নিয়ে চিন্তিত তিনি। হওয়ারই কথা ছিল-ফুটবলে নেপাল যে এখন বাংলাদেশের জন্য এক ধাঁধার নাম! নাছোড়বান্দার মতো বাফুফে সভাপতিকে আবার প্রশ্ন- অতীতে দেখা গেছে বয়সভিত্তিক দলগুলো ভালো ফলাফল করে আসার পরই হারিয়ে গেছে। এবার কী হবে?

‘অল্পতে বলি। এ কিশোরদের আমি হারিয়ে যেতে দেব না। খুব তাড়াতাড়ি তাদের দীর্ঘমেয়াদি আবাসিক প্রশিক্ষণ শুরু হবে’- এক কথায় পরিকল্পনার কথা বললেন বাফুফে সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিন। তবে অল্পতে বলার পরও একটা বিষয় নিয়ে কথা বাড়ালেন কাজী সালাউদ্দিন। আহ্বান করলেন দেশের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে এই ছেলেদের পাশে দাঁড়ানোর, ‘আমার হয়ে লিখে দিন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো এগিয়ে আসুক, পাশে দাঁড়াক কিশোরদের।’

পাশে বসা বাফুফের টেকনিক্যাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক ডাইরেক্টর পল থমাস স্মলিকে অভিনন্দন জানালে তার প্রশ্ন, কেন? ‘এই যে, কিশোররা কাতারকে হারিয়েছে তাই।’

অস্ট্রেলিয়ান এ ভদ্রলোক বললেন, ‘ছেলেদের এ সাফল্যে তার কোনো কন্ট্রিভিশন নেই।’ বোঝা গেল কথাটি তিনি মজা করেই বলেছেন। পরক্ষণেই যে তিনি কিশোরদের ভবিষ্যত নিয়ে আলোচনা শুরু করলেন বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগের সঙ্গে! এই ছেলেদের নিয়ে আপনার পরিকল্পনা কী?

This slideshow requires JavaScript.

‘কেবল এই ছেলেদের নিয়েই নয়, ছেলে-মেয়ে সব বয়সভিত্তিক দল নিয়েই আমি পরিকল্পনা সাজিয়েছি। আমি চাই আগামী ১০ দিনের মধ্যে কাতার ফেরত দলটিকে দীর্ঘমেয়াদি আবাসিক ক্যাম্পে তুলতে’- বলছিলেন পল স্মলি।

চাইলেই কী ছেলেদের দ্রুত ক্যাম্পে তোলা সম্ভব? অর্থ এবং ভেন্যুই বড় সমস্যা বাফুফের সামনে। তবে ভেন্যুর বিষয়ে একটা ফয়সালা প্রায় হয়েই গেছে। এই ছেলেদের ৩ থেকে ৪ বছরের জন্য ওঠানো হবে খুলনা বিকেএসপিতে। এ দলটি তৈরির আগে সেখানেই হয়েছিল কিছুদিনের আসাসিক ক্যাম্প।

বাফুফে সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ বললেন, ‘পল চাচ্ছেন দ্রুত খেলোয়াড়দের ক্যাম্পে তুলতে; কিন্তু আমাদের কিছু কাজ তো করতে হবে। খুলনা বিকেএসপি নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির কোনো আপত্তি নেই। শুধু তাদের সরকারের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দরকার। আসা করি, সহসা তা হয়ে যাবে। তারপরই আমরা সমঝোতা চুক্তি করবো। তা হতে পারে তিন বা চার বছরের। যেহেতু ক্যাম্প তাড়াতাড়ি শুরু করতে হবে তাই, বিকেএসপির সঙ্গে বাকি কাজটুকুও দ্রুত সেরে ফেলা হবে। ’

একাডেমির জন্য সিলেট বিকেএসপি বরাদ্দ পেয়েও তা কাজে লাগতে পারেনি বাফুফে। এবার বাফুফে খুলনা বিকেএসপি পেতে যাচ্ছে। আর এটা হচ্ছে দুই প্রতিষ্ঠানের সমঝোতার মাধ্যমে। গত ১৫ নভেম্বর বাফুফে ভবনে বিকেএসপির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সামছুর রহমানের সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিন।

বাফুফে সভাপতি তখন ফুটবল উন্নয়নে বিকেএসপির সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় কিশোর ফুটবলারদের দীর্ঘ মেয়াদি আবাসিক ক্যাম্পের জন্য খুলনা বিকেএসপি পেতে যাচ্ছে বাফুফে। সিলেট বিকেএসপিতে একাডেমি প্রতিষ্ঠার জন্য যে আসবাবপত্র ক্রয় করেছিল বাফুফে তার কিছু ইতিমধ্যে নেয়া হয়েছে খুলনায়।

<

p style=”text-align: justify;”>অনূর্ধ্ব-১৬ দলের খেলোয়াড়দের দীর্ঘমেয়াদি আবাসিক ক্যাম্প শুরু হলে ২৭ জনকে ডাকার কথা ভাবছেন। দোহায় খেলে আসা ২৩ জনতো থাকবেই। যোগ হবে আরো ৪ জন। সেই সঙ্গে কোচিং স্টাফের সদস্য হতে পারে আরো ৪/৫ জন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *