ছোট বেলাতেই সন্তানকে যে শিক্ষা দেয়া প্রয়োজন

কিশোর বাংলা প্রতিবেদন: প্রত্যেক বাবা-মা চান তাদের সন্তান একজন আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে উঠুক। আদর্শ মানুষের মধ্যে থাকা গুণাবলীগুলো কিন্তু সন্তানের মধ্যে একাকী চলে আসে না। এর জন্য প্রয়োজন হয় একটি ভালো পরিবেশ, দায়িত্বশীল বাবা-মা এবং তাদের সৎ সংস্কার। তাই আপনার সন্তানকে ১০ বছর বয়সের আগে কিছু সংস্কার শিক্ষা দিন।
বাবা-মা কখনো শত্রু  নয়:
সন্তানের বন্ধু হয়ে ওঠা খুব কষ্টকর। কিন্তু আপনাকে এ চেষ্টা অবশ্যই করতে হবে। খুব বেশি জোরাজুরি করা উচিত নয়। ধীরে ধীরে সন্তানের কাছের মানুষ হয়ে ওঠার চেষ্টা করুন যেন যেকোনো বিপদে-আপদে সে আপনার কাছে আসতে পারে।
ভুল করা কোনো অপরাধ নয়:
ভুল থেকে যদি কোনো শিশু কিছু শিখতে পারে, তবেই কিন্তু সে একটি আদর্শ। নিজের ব্যর্থতা থেকেও কিছু না কিছু শেখার চেষ্টা করুন। আপনার সন্তান যেন ভুল করতে কখনো ভয় না পায়।
ছেলে কিংবা মেয়ে হোক, সকলকেই সম্মানের চোখে দেখতে হবে:
আপনার সন্তানকে ছেলে কিংবা মেয়ে আলাদা সত্তা হিসেবে পরিচয় করানোর প্রয়োজন নেই। তারা যেন সকলকেই সমানভাবে সম্মান প্রদর্শন করে সেদিকে দৃঢ় মনোযোগ দিন। লিঙ্গ বৈষম্য যেন তাদের মধ্যে কোনভাবেই প্রকাশিত না হয়।
গ্রেডের চাইতে জ্ঞান বড়:
অনেক সময় সন্তানেরা পরীক্ষায় আশানুরুপ ফলাফল না করলে বাবা-মা খুব ক্ষেপে যান এবং খুব কঠোরভাবে তিরস্কার করতে থাকেন। এটি খুবই ক্ষতিকারক। আপনার সন্তানকে এটি শিক্ষা দিন যে গ্রেডের চাইতে অর্জিত জ্ঞানই প্রয়োজনীয়।
অন্য কারো জন্য সে যেন ইচ্ছার বিরুদ্ধে কাজ না করে:
বাচ্চারা মনে করে থাকে যে বন্ধুদের মধ্যে জনপ্রিয়তা পাওয়াটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। তারা সব সময় চেষ্টা করে এটি অর্জন করার জন্য। আপনার নিজের বিভিন্ন অভিজ্ঞতা সন্তানের সঙ্গে শেয়ার করুন এবং তাকে শেখান যে সৎ এবং সম্মানিত হওয়া যেকোনো কিছুর উর্ধ্বে। এমনকি জনপ্রিয় হবার চেয়েও।
নিজের পক্ষে কথা বলা শেখান:
কিছু কিছু পিতা-মাতা নিজের সন্তানের চেয়ে তাদের শিক্ষক কিংবা অন্য বাচ্চাদের প্রতি অধিক ভালোবাসাপূর্ণ আচরণ করেন। এতে করে আপনার নিজ সন্তান কিন্তু বেশ নিরাপদহীনতায় ভোগে এবং অকর্মঠ হয়ে ওঠে। আপনার সন্তানকে বোঝান যে সম্মান সকলের জন্যে সমান গুরুত্বপূর্ণ। অন্যকে সম্মান করার পাশাপাশি সে যেন নিজের প্রতিও যথেষ্ট সম্মান প্রদর্শন করে।
অসুস্থ বোধ করলে সঙ্গে সঙ্গে বলতে শেখান:
একজন শিশু যেন কখনোই স্বাস্থ্যের ব্যাপারে কথা বলতে জড়তাবোধ না করে। এ শিক্ষাটি পরিবার থেকেই দিতে হবে। গ্রেড এবং শিক্ষকের বকুনির চাইতে স্বাস্থ্যের দিকে নজর দেওয়া অবশ্য কর্তব্য। এটি সন্তানকে ভালোভাবে বুঝিয়ে দিন।
নাবলতে শেখান:
আপনার সন্তানকে বয়স্ক মানুষ, শিক্ষক এবং নিজেকে ‘না’ বলতে শেখান। আপনি তাকে একটি শক্তিশালী ব্যক্তিত্ব হিসেবে তৈরি করতে চাচ্ছেন, অবশ্যই অন্যের গোলাম হতে শেখাচ্ছেন না। তার এ অভ্যাস পরিপূর্ণ বয়সে তাকে বেশ সাহায্য করবে।
কিছু না বুঝলে প্রশ্ন করতে শেখান:
যেকোনো ব্যাপারে না বুঝলে প্রশ্ন করা খুব সাধারণ। সবকিছু বুঝে ফেলেছেন এমন মিথ্যে ভান করার চাইতে প্রশ্ন করা ঢের কৃতিত্বের। এ ব্যাপারটা বোঝানোর জন্য শৈশব খুব ভালো সময়।