কিশোর বাংলা প্রতিবেদন: একটি দেশের ভাবিষ্যত হলো সে দেশের তরুন সমাজ। এ ভবিষ্যৎকে নষ্ট করার অপকৌশল হচ্ছে অপসংস্কৃতিকে উৎসাহিত করে বাস্তবে তা প্রয়োগ করা। আমাদের সমাজের তরুন-তরুনীদের উপর অপসংস্কৃতির কু-প্রভাব অতি গভীর ও ব্যাপক। তারা আজ সংস্কৃতির নামে অপসংস্কৃতি অনুশীলনে মেতে উঠেছে। সিনমার কাহিনী, নাচ, গান, পোষাক-আশাক ইত্যাদি বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এমন উদ্ভটভাবে সন্নিবেশিত হয়ে থাকে।
তরুণরা অপসংস্কৃতিতে আকৃষ্ট হচ্ছে। তার কারণ এতে চমক আছে উত্তেজনা আছে আর আছে ক্ষণিক আনন্দ। এর একটা মোহ আছে। তরুণরা চঞ্চল। তারা চায় নতুন কিছু করতে, নতুনের সাথে চলতে। এ চলতে গিয়ে, নতুন কিছু করতে গিয়ে তারা যে এগিয়ে যাচ্ছে ধ্বংসের পথে তা তারা বুঝতে পারছে না, তাদের ধ্বংস তারা দেখতে পাচ্ছে না।
সংস্কৃতি আসলে একটা দৃষ্টিভঙ্গীর ব্যাপার, একটি জীবনবোধ বিনির্মাণের কলাকৌশল। এটি মানুষের জীবনের একটি শৈল্পিক প্রকাশ, সমাজ জীবনের স্বচ্ছ দর্পণ। এ সংস্কৃতির দর্পণে তাকালে কোন সমাজের মানুষের জীবনাচার, জীবনবোধ ও দৃষ্টিভঙ্গীর প্রতিচ্ছবি দেখা যায়। অন্য কথায়, সমাজ মানুষের জীবনাচার, দৃষ্টিভঙ্গী আর বোধ-বিবেচনা থেকেই সে সমাজের সংস্কৃতি জন্মলাভ করে। তবে সংস্কৃতি এমন কোন জিনিস নয় যে, এটি একবার ছাচে তৈরি হবে, তার কোন পরিবর্তন করা যাবে না।
বরং সমাজ ও জীবনের পরিবর্তনর এবং সময়ের ধারায় এ সংস্কৃতি পরিআতিত হতে পারে। এমন কি অন্য কোন সংস্কৃতির সংস্পশে এসে পারস্পরিক বিনিময়ের মাধ্যমে নতুন নতুন উপাদান সংগ্রহ করে নিজেকে সমৃদ্ধ করতে পারে। এমন কি অন্য কোন সংস্কৃতির সংস্পশে এসে পারস্পরিক বিনিময়ের মাধ্যমে নতুন নতুন উপাদান সংগ্রহ করে নিজেকে সমৃদ্ধ করতে পারে। অন্যদিকে ভিনদেশী সংস্কৃতির তোড়ে নিজের সংস্কৃতির অস্তিত্ব হারিয়েও ফেলতে পারে। আর দুভাগা পরিণতি যে সমাজের হয় সে সমাজেই সাংস্কৃতিক বন্ধাত্বের জন্ম হয়। দুঃখজনক হলেও সত্য আমাদের সমাজে ঠিক তাই ঘটেছে।
সংস্কৃতি যেমন জীবনকে সুন্দরের পথ দেখায় আর অপসংস্কৃতি মানুষকে অসুন্দরের পথে নিয়ে যায়, অন্ধকারের দিকে ঠেলে দেয়। অপসংস্কৃতি জাতীয় মূল্যবোধকে গলাটিপ হত্যা করে, বিবেকের দরজায় কড়া লাগায়। অপসংস্কৃতি মানুষকে তাঁর মা, মাটি ও দেশের প্রতি ভালবাসা থেকে দূরে সরিয়ে নেয়। মা, মাটি ও দেশকে স্বাধীনতা করতে শেখায়। এ অপসংস্কৃতির চকম মরীচিকার মত। এর চমক মানুষকে বিবেক বর্জিত পশুতে পরিণত করে।
তরুনরা আগামী দিনের ভবিষ্যত । দেশ গঠনে তারাই রাখতে পারবে অগ্রনী ভুমিকা। তাই তাদের নৈতিক চরিত্র উন্নত করার জন্য বাবা মা, শিক্ষক, এবং সংস্কৃতি কর্মীদের প্রধান ভূমিকা রাখতে হবে। বাবা মায়েদের উচিত সন্তানকে ভালো লেখা পড়ার পাশাপাশি নৈতিক মূল্যবোধের শিক্ষা দেয়া। যারা নাট্যকার, চলচিত্রকার,সাহিত্যিক তারা তাদের উচিত নাটক, চলচিত্র এবং সাহিত্য নির্মানের প্রধান উপজিব্য বিষয়গুলোতে পরিবর্তন করা। নারী পুরুষের অবাধ প্রেম ভালবাসাটাকে হাইলাইটস না করে সমাজের যে নানা রকম অসংগতি গুলো আছে সেগুলোকে প্রধান উপজিব্য বিষয় হিসাবে নেয়া এবং কিভাবে বাবা মাকে সম্মান দিতে হয় সেইসব বিষয়ে তাদের শিল্পকর্মকে কাজে লাগানো।