কিশোরবাংলাপ্রতিবেদন: শারীরিক, মানসিক এবং সামাজিকভাবে ভালো থাকার নাম স্বাস্থ্য। এই তিনের মধ্যে মনের আধিপত্যই বেশি। প্রফুল্ল মন সুস্বাস্থ্যের সবচেয়ে বড় নিদর্শন। তাই মনকে ভালো রাখার দায়িত্ব সবার। আমরা আমাদের সুখ-দুঃখ, ব্যথা-বেদনা, হতাশা-ব্যর্থতা সবই মন থেকে অনুভব করে থাকি। মন ও শরীর এই দু’য়ের ব্যথা ও যন্ত্রণাবিহীন কোনো অসুস্থতা নেই।
শৈশবে আমাদের মন-মানসিকতা ও ব্যক্তিত্বের ভিত রচিত হয়। পরিবার-পরিজন, সমাজ ও শিক্ষালয় থেকে শৈশবে আমরা যে শিক্ষা পাই তার সমন্বয়ে পরবর্তী জীবনের জন্য আমাদের মন-মানসিকতা প্রস্তুত হয়। এভাবে প্রাপ্ত শিক্ষা কিছু কিছু ক্ষেত্রে নেতিবাচকও হয়। সে কারণে ছেলেমেয়েদের আচার-আচরণ ও ব্যক্তিত্ব ভিন্নভাবে রূপায়িত হয়, যা পরবর্তীতে অনেক সমস্যার সৃষ্টি করে।
শৈশবে ছেলেমেয়েরা আপনজন অথবা পরিচর্যাকারীর কাছে লালিত-পালিত হয়। শিশুদের অবুঝ মনে নানা প্রশ্নের উদয় হয়। একটা বয়স পর্যন্ত শিশুরা ভয়-ভীতি, ভূত-প্রেত, দৈত্য-দানব, বাঘ-ভাল্লুক, দুঃখ-কষ্ট এসব কিছুই চিনে না। সবই তাদের শেখানো হয়। শিশুদের লালন-পালন পদ্ধতি আছে, যা অনেকের অজানা।
তাই একটু কিছু ব্যত্যয় হলেই আপনজন, পরিচর্যাকারী অথবা প্রতিবেশীরা শিশুদের মস্তিষ্কে নানা ধরনের ভয়-ভীতি, ভূত-প্রেত, দৈত্য-দানব ঢুকিয়ে দেন। ফলে ওই জাতীয় ঘটনাগুলো শিশুরা সর্বদা চোখের সামনে দেখতে থাকে, ঘুমের মধ্যে দেখে থাকে, ফলে শিশুটি কিছুতেই ঘুমাতে পারে না, সর্বদা ঘটনার কথা মনে পড়ে, যা অনভিপ্রেত।
বিশ্বখ্যাত চিকিৎসা বিজ্ঞানী এবং হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার জনক ক্রিশ্চিয়ান ফেডরিক স্যামুয়েল হ্যানিমানের মতে, ‘জড়দেহ, জীবনীশক্তি ও বিবেক-বুদ্ধিসম্পন্ন মন- এই তিনের সমন্বয়ে প্রত্যেক মানুষের চৈতন্যময় ব্যক্তি-সত্তা গঠিত। মনুষ্যত্ব বিকাশের পথে এই ত্রয়ীর একটি অন্যটির ওপর নির্ভরশীল। জড়দেহকে আশ্রয় করে জীবনীশক্তি এবং বিবেক-বুদ্ধিসম্পন্ন মন- উভয়ের সুসামঞ্জস্ ক্রিয়াশীল মানুষ তার অভীপ্সিত উন্নততর জীবনের পথে অগ্রসর হতে পারে।’ এখানে সুস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে বিবেক-বুদ্ধিসম্পন্ন মনের বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। তাঁর এই মতবাদ সারাবিশ্বে স্বীকৃতি পেয়েছে।