কিশোরবাংলাপ্রতিবেদন: শিশুর প্রতিভা বিকাশে চাই শিশু বান্ধব পরিবেশ। শিশু জাতির শ্রেষ্ঠ সম্পদ। শিশুদের ভাল করতে হলে তাদের শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে হলে, তাদের সুখী করতে হবে। আনন্দের মাঝেই শিশুর শিক্ষা জীবনের অবস্থান। কঠোর শাসন, নিয়ন্ত্রন, প্রতিকুল পরিবেশ, শিশুর শিক্ষা জীবনকে অনিশ্চয়তার পথে ঠেলে দেয়। শিশুর মনের আনন্দই তার দেহ মনের শক্তির মূল উৎস। আনন্দ ও শিশু বান্ধব পরিবেশ ছাড়া তার সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ অসম্ভব।
পূর্বে শিক্ষা বলতে বুঝানো হতো শিশুকে নিয়ন্ত্রণ করা বা শাসন করা। শিশুকে নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলার মধ্যে রেখে বিদ্যা দান করার যে পদ্ধতি আমাদের দেশ তথা এতদ অঞ্চলে প্রচলিত ছিল, তাকেই শিক্ষা হিসেবে বিবেচনা করা হতো। কিন্তু আধুনিক শিক্ষাবিদরা এ ধরনের শিক্ষাকে সংকীর্ণ শিক্ষা হিসেবে অভিহিত করেছেন।
শিশুর ওপর জোর করে বিদ্যা চাপিয়ে দেয়ার নাম শিক্ষা নয়। শিশুর গ্রহণ উপযোগী আনন্দঘন পরিবেশে শিক্ষা দানই হলো প্রকৃত শিক্ষা।
শিশুরা কোমল মনের অধিকারী। আনন্দঘন পরিবেশে থাকতেই শিশুরা স্বাচ্ছন্দ বোধ করে। শাসন, নিয়ন্ত্রণ, ভীতিকর ও বিষাদময় পরিবেশ শিশুর শিক্ষা লাভকে বাধাগ্রস্থ করে। শিশু শিক্ষা ও আনন্দ ওৎপ্রোতভাবে জড়িত। আনন্দ ছাড়া কোমলমতি শিশুরা শিক্ষা লাভে উৎসাহিত হবে না। শিক্ষার্থীর শিক্ষাকাল হলো একটা মানসিক ভ্রুন অবস্থা।
উপযুক্ত পরিবেশ পেলেই সেই ভ্রুন বিকশিত হওয়ার সুযোগ পাবে। শিশুরা শিখবে আনন্দের মাধ্যমে, নিজেদের ইচ্ছামতো, ঘুরে-ফিরে, কল্পনার ফানুস উড়িয়ে। শিশুরা শিখবে খেলাধূলার মাধ্যমে, তাদের মনের অজান্তে। প্রকৃতির সাথে সংযোগ রেখে মনের চর্চা করবে তারা, শ্রেণিকক্ষের চারদেয়ালের মধ্যে সীমাবদ্ধ থেকে নয়।
বিদ্যালয়ে আনন্দমূলক পরিবেশে শিক্ষাদানের মাধ্যমে শিশুর প্রতিভা বিকশিত করার ব্যাপারে শ্রেণি শিক্ষকের ভূমিকাই মুখ্য। একজন শিক্ষকের উপরই বিদ্যালয়ের সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীর ভবিষ্যৎ নির্ভরশীল। বিদ্যালয়ের শিক্ষক হচ্ছেন শিশু শিক্ষার একজন সুনিপুন মিস্ত্রি, যিনি গঠন করবেন শিশুর মানবাত্মা।
শিশুবান্ধব পরিবেশে শিক্ষার ব্যাপারে পিতা-মাতা, ভাই-বোন ও অন্যান্য বড় সদস্যদের ভূমিকা থাকতে হবে। পরিবারের সদস্যদের সবসময় সচেতন ও সতর্ক থাকতে হবে। শিশুর পরিবারে থাকতে হবে পড়াশোনার উপযুক্ত পরিবেশ এবং বিনোদনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা। শিশু মনে দাগ কাটতে পারে এমন অশোভন আচরণ থেকে পরিবারের সদস্যদের বিরত থাকতে হবে।