বয়ঃসন্ধিকালে কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্য
কিশোর বাংলা প্রতিবেদন: বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার মতে ১০ থেকে ১৯ বছর বয়স পর্যন্ত সময়কে কৈশোর বলে। ১০ বছর এবং ১৯ বছর বয়সের মাঝামাঝি সময়টাকে বয়ঃসন্ধিকাল বলে। বয়ঃসন্ধিকালে ছেলেমেয়েরা দ্রুত বড় হতে থাকে। শরীর এবং শরীর বৃত্ত সংক্রান্ত পরিবর্তনের ফলে এ সময় ছেলে মেয়েরা নতুন জগতে প্রবেশ করে। তাদের চিন্ত চেতনায় দেখাদেয় ব্যাপক পরিবর্তন। শারীরিক পরিবর্তনের পাশাপাশি মানসিক বিকাশ এবং দায়িত্ব বোধযোগ হতে থাকে এ সময়ে ।
ছেলেদের ক্ষেত্রে বিকাশ পর্ব টি ১১ থেকে ১৭ বছর । এ বয়সেই একটি ছেলের জীবনে প্রজনন ক্ষমতার সূচনা হয়। তার উচ্চতা বাড়ে। কাঁধ চওড়া হয়। কণ্ঠস্বর ভারী হয়। আমাদের দেশের মেয়েদের শারীরিক গঠনের পরিবর্তন ১০ থেকে ১৩ বছর বয়সের মধ্যে শুরু হয়। এ সময়টা হলো মেয়েদের বয়ঃসন্ধি কাল ।
এসময়টাতে কিশোর-কিশোরীদের আরও একটি সমস্যা হলো দ্বিধা-দ্বন্ধ, ভয় ও লজ্জা। এই সময়টাতে তারা নিজেদেরকে পরিবার ও সমাজের কাছ থেকে আড়াল করে নেয়। যার ফলে তারা তাদের নানা ধরনের শারীরিক ও মানসিক সমস্যা সম্পর্কে দ্বিধা-দ্বন্ধে ও ভয়ে পড়ে যায়। এটিও তাদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশ ব্যহত করে থাকে। তাই এ থেকে তাদের বের করে আনার জন্য পরিবারের বড়দেরকেই এগিয়ে আসতে হবে।
কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্য ও পুষ্টি :
ছেলে ও মেয়ের মধ্যে কোন বিভেদ না রেখে প্রত্যেকেরই নিজ নিজ প্রয়োজন অনুযায়ী তার শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য যথাযথ সুষম ও পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। এ বয়সে পুষ্টিকর খাবারের অভাবে শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়।
মেয়েরা কখনোই কম খাবার খাবেনা বা নিজেদের অযত্ন করবেনা। শারীরিকভাবে দূর্বল এবং অপুষ্টির শিকার কিশোরীরা পরবর্তীকালে গর্ভধারণ করলে অনেক জটিলতার সৃষ্টি হতে পারে।
সন্তানের বয়ঃসন্ধিকালে খাবার দাবারে অভিভাবকদের বাড়তি সচেতনতা দরকার। কারণ এ সময় হরমোনের পরিবর্তনের জন্য কিশোর-কিশোরীদের শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন ঘটে। বয়ঃসন্ধি কালে তারা বেড়ে ওঠে তরতর করে। এ বয়সে প্রয়োজন বেশি পরিমাণ শক্তি ও পুষ্টির। তাই খাদ্যাভ্যাস কেমন হওয়া উচিৎ।
এ সময় ছেলেমেয়েদের খাওয়া-দাওয়ার রুচির বদল হয়। শুধুস্বাস্থ্য গত দিক নয়,এ সময়ের খাদ্যাভ্যাসন শিশুর পরবর্তী জীবনের পছন্দনীয় খাদ্য তালিকার ভিত গড়ে তোলে। খাওয়া-দাওয়ায় এসময় একটু অবহেলা করলেই পরে পুষ্টিহীনতার শিকার হওয়ার ঝুঁকিতে পড়তে হয়। শর্করা খাবারের পাশাপাশি হাড়ের বৃদ্ধির জন্য দরকার ক্যালসিয়াম ও আয়রন। এসব পাওয়া যাবে দুধ, ডিম ও ফলমূলে। এ রকম বয়সে দুধ খেতে চায়না অনেকেই।
তাই তাদের সরাসরি দুধ না দিয়ে দুধের তৈরি ফিরনি, দই, সেমাই তৈরি করে দেওয়া যেতে পারে। এ সময় হাড়ে মিনারেলের ঘাটতি থাকলে পরবর্তী সময়ে অস্টিওপোরেসিস হওয়ার আশঙ্কা থাকে। মিনারেল পাওয়া যাবে নানা ফলমূল ও শাক সবজিতে। বয়ঃসন্ধির সময় মেয়েদের আয়রনের ঘাটতি এড়াতে খেতে হবে আয়রন সমৃদ্ধ খাবার।