নদী বাঁচাতে কাগজের নৌকা ভাসিয়ে শিশুদের অভিনব প্রতিবাদ
কিশোর বাংলা প্রতিবেদনঃ বগুড়া শহরের বুক দিয়ে বয়ে যাওয়া এক সময়ের করতোয়া নদী এখন আমাদের শিশুদের কাছে যেন রূপকথার এক গল্প। দখলদারের দৌরাত্ম্য আর অপরিকল্পিত ব্যবস্থাপনায় মৃত প্রায় এই নদী। এই নদীর বুকে প্রাণের জলধারা বয়ে চলুক এই প্রত্যাশাকে সামনে রেখে শিশু-কিশোরদের শিল্পের পাঠশালা ‘বাবুই’ এর আয়োজনে বগুড়ায় হয়ে গেল শিশুদের এক অভিনব প্রতিবাদ কর্মসূচি। এ কর্মসূচিতে শিশুরা কাগজের নৌকা ভাসিয়ে প্রতিবাদ করে।
নদীকেন্দ্রিক উৎসব আয়োজন ফিরে পাওয়ার দাবি জানিয়ে মরা করতোয়ার পাড়েই অংশ নেয় মধুমাসের ফল উৎসবে। বিগত তিন বছর ‘করতোয়ায় প্রাণ চাই’ এই মূল প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে নদীর পাড়ে দিনব্যাপী এক কর্মসূচি পালন হয়ে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার (৫ জুলাই) বিকাল ৬টায় বগুড়া কালেক্টরেট স্কুল সংলগ্ন করতোয়া নদীর পাড়ে ‘বাবুই’ এর শিশুরা নানা রাঙের কাগজের নৌকা মরা করতোয়ায় ভাসিয়ে জানাল তাদের প্রতিবাদের ভাষা। সেই সঙ্গে নদীমাতৃক সোনার বাংলার আবহমান কালের ঐতিহ্য ধারণের চেষ্টায় নদী পাড়েই উদযাপন করেছে মধুমাসের ফল উৎসব।
শিশুদের এই ব্যতিক্রমী আয়োজনে শামিল হয়েছিলেন অভিভাবকসহ নানান শ্রেণি পেশার মানুষ। করতোয়া রক্ষার্থে সকলেই তাদের এই প্রতিবাদ কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন। আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন বগুড়ার জেলা প্রশাসক ফয়েজ আহাম্মদ। শিশুদের এই অভিনব প্রতিবাদকে স্বাগত জানিয়ে তিনি করতোয়া রক্ষায় সরকারের উদ্যোগের কথা জানান এবং খুব শীঘ্রই দখল ও দূষণমুক্ত করে আগের রূপে ফিরিয়ে আনার অশ্বাস দেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- বাবুই পরিচালক রাকিব জুয়েল, সংস্কৃতজন জিয়াউল হক বাবলা, খলিলুর রহমান চৌধুরী, সাংবাদিক আব্দুস সালাম বাবু, বাচিক শিল্পী শরিফ মজুমদার, অলোক পাল প্রমুখ।
উল্লেখ্য, সাংস্কৃতিক চর্চা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় শিশু-কিশোরদের মনন কাঠামো গড়ে তোলার প্রত্যয়ে ২০১৫ সালের ৭ এপ্রিল প্রতিষ্ঠিত হয় শিশু-কিশোরদের শিল্পের পাঠশালা ‘বাবুই’ নামের সাংস্কৃতিক চর্চালয়।