গরমে জরুরী শিশুর যত্ন
কিশোর বাংলা প্রতিবেদন: পূর্ণবয়স্ক একজন মানুষের ত্বকের চেয়ে শিশুদের ত্বক ভিন্ন রকমের হয় বলে গরমে শিশুর যত্ন নেয়া অত্যন্ত জরুরী। শিশুর ত্বক কেবল নরম ও কোমলই নয়, বরং অনেক বেশি সংবেদনশীল ও দুর্বল হয়। বড়দের ত্বকের চেয়ে শিশুদের ত্বক ২০-৩০% পাতলা হয়। তাই গরমে যদি আপনার সোনামনির ভাল ভাবে যত্ন নেয়া না হয় তাহলে তার অনেক রকম অসুখ হতে পারে। চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই, গরমে শিশুর যত্ন নেয়ার কিছু টিপস জেনে নিই চলুন।
নিয়মিত গোসল
এই গরমে বাচ্চাদের খুব এলার্জি উঠে। তাই যখন গোসল করাবেন তখন বাচ্চার গলার ভাঁজ, বগল, ২ পায়ের ভাঁজ, হাটুর ভাঁজ ও শরীরের অন্যান্য ভাঁজযুক্ত জায়গা যত্ন সহকারে পরিষ্কার করবেন। আপনি চাইলে পানিতে নিম তেল অথবা ডেটল কয়েক ফোঁটা মিশিয়ে নিতে পারেন। এতে করে বাচ্চার শরীরে থাকা ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হবে। এছাড়া বাচ্চার হাত সবসময় পরিষ্কার রাখতে হবে। বাচ্চাকে বার বার হাত ধোয়ার অভ্যাস করাতে হবে। এছাড়াও দিনে বেশ কয়েকবার একটি পাতলা সুতি কাপড় ভিজিয়ে বাচ্চার গা মুছে দিন।
সুতি পোষাক
বাচ্চাকে সহজে বাতাস চলাচল করতে পারে এমন সুতির জামা পরাবেন। বেশি গরম পড়লে শুধুমাত্র সুতির প্যান্ট পরিয়ে রাখুন। বাচ্চাকে বাইরে না নিয়ে যাওয়াই ভালো। বিশেষ করে সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত দরকার না পড়লে আপনার শিশুটিকে ঘরে ঠান্ডা আবহাওয়ায় রাখুন। যদি বাচ্চাকে বাইরে নিয়ে যেতেই হয় তাহলে একটা বড় ক্যাপ পরান অথবা ছাতা ব্যবহার করুন। সানস্ক্রীন লাগাতে ভুলবেন না যেন।
খাবার ও পানি
বাচ্চার বয়স অনুযায়ী খাবার দিন। ২ বছর পর্যন্ত বুকের দুধ খাওয়ান এবং বাচ্চার ৬ মাস পর্যন্ত শুধুমাত্র বুকের দুধ খাওয়ান। বাচ্চাকে এই সময় বুকের দুধ ছাড়া পানি খাওয়ানোর-ও দরকার নেই। ৬ মাসের পর বুকের দুধের পাশাপাশি পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ান। গরমে বাচ্চাকে একটু পরপর বুকের দুধ খাওয়ান যাতে বাচ্চা পানিশূন্যতায় না ভোগে। এছাড়া স্যালাইন পানি, ডাবের পানি, লাচ্ছি, শরবত, ফলের রস দিন আপনার ছোট সোনামনিকে। একটি কথা বলে রাখা জরুরী, যে পাত্রে আপনার বাবুটি খায় তা অব্যশই পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত থাকা দরকার। বাসি ও পচাঁ খাবার পরিহার করুন। বাইরের খাবার এড়িয়ে চলুন। অতিরিক্ত গরম ও ঠান্ডা খাবার পরিহার করুন। প্রচুর পরিমাণে পরিষ্কার ও ফুটানো পানি পান করান।
বাড়িঘরের পরিবেশ
বাড়িতে বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা থাকতে হবে। জানালা খোলা রাখুন। বাড়ির চারপাশে ঝোপঝাড় কাটুন ও বদ্ধপানি অপসারণ করুন। তেলাপোকা, পিঁপড়া, ইঁদুর, মাছি ও মশা থেকে ঘর নিরাপদ রাখুন। এজন্য প্রয়োজনীয় ডিজইনফেক্ট্যান্ট ব্যবহার করুন। এছাড়া বাড়িঘর পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত রাখুন।
গরমে শিশুর বিশেষ যত্নের প্রয়োজন ও তা অত্যন্ত জরুরী । এ সময় শিশুর খাওয়া-দাওয়া, গোসল ও পোশাক নির্বাচনের সময় মায়েদের বিশেষ যত্নবান হতে হবে। শিশুর প্রতি বিশেষ যত্ন নিলে এসব সমস্যা সহজেই এড়ানো সম্ভব।

