১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে শিশু-কিশোররা

কিশোর বাংলা প্রতিবেদন: ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধ। নয় মাসব্যাপী এ যুদ্ধে অনেক রক্ত, ত্যাগ, তিতিক্ষার পর আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। এই যুদ্ধে ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েরা যেমন অংশগ্রহণ করেছিল তেমনি অংশগ্রহণ করেছিল শিশু-কিশোররাও।

তারা মুক্তিযুদ্ধের সাথে নানাভাবে জড়িত ছিল। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, মুক্তিযুদ্ধে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে প্রায় ৪ লাখই ছিল শিশু-কিশোর। আর যে সব নারী সম্ভ্রম হারিয়েছিল তাদের মধ্যে প্রায় অর্ধেকই ছিল কিশোরী। তাই, মুক্তিযুদ্ধের সংগ্রামে শিশু-কিশোরদের অবদান কিছুতেই খাটো করে দেখা যায় না।

প্রতিরক্ষা এলাকায় কোনো বেসামরিক ব্যক্তিকেই প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না, এটাই সামরিক শিক্ষা। আমাদের ছেলেরা শুধু প্রতিরক্ষা এলাকায়ই প্রবেশ করবে তা নয়, তাদের শত্রুর বাংকার পর্যন্ত পৌঁছাতে হবে এবং সবাইকে একসঙ্গে। এ ধরনের (দিনের রেইড) অপারেশন কেবল অভিজ্ঞ কমান্ডোদের দ্বারাই সফল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ছেলেদের কেউ শত্রু প্রতিরক্ষা অবস্থানে মারা গেলে বা ধরা পড়লে এদের মৃতদেহও পাওয়ার সম্ভাবনা নেই।

শিশু-কিশোরদের যেমন বিজয়ের ঘটনা আছে তেমনি আছে শহীদ হওয়ার ঘটনাও। অনেকে গোপনে মুক্তিযোদ্ধাদের খবর আনা-নেয়া করতে করতে কোনোদিন আর ফিরে আসেনি। তার লাশও খুঁজে পাওয়া যায়নি।

বিচ্ছিন্নভাবে শিশু-কিশোরদের সারা দেশে এমন অনেক অনেক ঘটনা আছে যা দেশ স্বাধীন করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। ক্লাস ফোর-ফাইভের ছাত্ররা যুদ্ধে এসেছিল। ।

মুক্তিযুদ্ধে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন করতে বড়দের সঙ্গে মাঠে নেমেছিল শিশুরাও। রাতের আঁধারে অথবা প্রয়োজনীয় যেকোনো মুহূর্তে এক ক্যাম্পের খবর অন্য ক্যাম্পে পৌঁছে দিয়েছে শিশু-কিশোররা। তারা গ্রামের বিভিন্ন বাড়ি থেকে খাবার সংগ্রহ করে মুক্তিযোদ্ধাদের খাইয়েছে।

বিভিন্ন সময়ে মুক্তিযোদ্ধাদের গুপ্তচর হয়ে পাকিস্তানি শিবিরে ঢুকে সংবাদ বা যে কোনো প্রয়োজনীয় তথ্য মুক্তিযোদ্ধাদের জানিয়েছে, পাকিস্তানি হানাদারদের ভুল রাস্তা দেখিয়েছে। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প থেকে অস্ত্র ও গোলাবারুদের তত্ত্বাবধান করা, মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে থেকে গোলাবারুদ ও অস্ত্র সরবরাহ করাসহ যুদ্ধক্ষেত্রে নিজের সঙ্গে অস্ত্র নিয়ে বেড়ানোসহ মুক্তিযোদ্ধাদের অন্যান্য ছোট-খাটো কাজ করেছে।