শীতের সময়ে ছোটদের ফ্যাশনেবল পোশাক

কিশোর বাংলা প্রতিবেদন : আমাদের দেশে শীতের সময় মানেই পোশাকের ফ্যাশনে একটা বড়সড় পরিবর্তন। সারা বছর যেসব হালকা পোশাক পরে ফুরফুরে মনে ঘুরে বেড়িয়েছেন, শীতে আর তা পরার জো নেই। পরতে হবে শীত তাড়ানি মোটা মোটা সব কাপড়। তবে কয়েক বছর থেকেই ছোট বড় সকলেরই শীতের পোশাকে ফ্যাশনেবল পোশাক ঠাঁই পেয়েছে। এ বিশেষ  প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন- মোসাম্মৎ সেলিনা হোসেন
শীতকে তাড়ানোর পোশাকে ফ্যাশনেবল আর স্টাইলিশ পোশাক নিশ্চয়ই মন্দ হয় না। তাই এখনকার সব ধরনের শীতের পোশাকই বেশ স্টাইলিশ করে তৈরি করা হচ্ছে। শিশু-কিশোররাও এখন বেশ স্মার্ট আর ফ্যাশন সচেতন। তাই তাদের শুধু একটা রঙিন সোয়েটার কিনে দিয়েই দায়মুক্তির উপায় নেই। কী শীত, কী গ্রীষ্ম- ওরা তো সারা বছরই ফ্যাশন সচেতন!
শীতের পোশাকগুলো সাধারণত ভেতরের জামা-কাপড়কে ঢেকে দেয়। তাই ছোটদের সোয়েটারটি হতে হবে রঙিন। এ দিকটি মাথায় রেখে শীতের পোশাকে যোগ করা হচ্ছে বিভিন্ন রঙ। মেয়েদের ফতুয়া ও ফ্রকে যোগ করা হয়েছে হুডি আর থ্রি-কোয়ার্টার প্যান্টের বদলে ফুলপ্যান্ট। শিশুদেরশীতের পোশাকের কাপড় সুতি হলে পরতে আরামদায়ক হয়। তাই শিশুদের বেশিরভাগ শীতের পোশাক করা হয়েছে সুতির ওপর। রয়েছে ডেনিমের প্যান্ট আর উলের সোয়েটারও। এছাড়া চামড়ার জ্যাকেটও কিনতে পারেন। শিশুদের উল ও চামড়ার শীতের পোশাক কিনতে চলে যেতে পারেন বিভিন্ন শপিংমলে।
এবার মেয়ে শিশুদের জ্যাকেট, ওভারকোট, কার্ডিগান এবং উল ও ক্যাশমেয়ার সোয়েটার বেশ চলছে। লাল, নীল, হলুদ, গোলাপি রঙের পাশাপাশি সাদা রঙের সোয়েটারও শিশুরা পছন্দ করছে। প্রতি বছরই এর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন ডিজাইন আর কাটিং। শিশুর শীতের পোশাকে জিন্সের ফ্রক, স্কার্ট, উলের সেট, বেবিকিপার, রেকসিনের জ্যাকেট, ওভারকোট, কার্ডিগান, উল ও ক্যাশমেয়ার বেশ চোখে পড়ছে। এছাড়াও বৈচিত্র্যময় মাফলার, নতুন ডিজাইনের কানটুপি এসেছে বাজারে। ছোট ছোট মাফলারে নানা রকম ঝুল বেশ আকর্ষণীয় করে তুলেছে এগুলোকে।

This slideshow requires JavaScript.

কিশোরী ও তরুণীরা ইদানীং জিন্স-টপসের মতো পশ্চিমা পোশাকগুলোর দিকে ঝুঁকছে। এছাড়া পোশাকের কাটিংয়ে এসেছে অনেক পরিবর্তন। শীতের জন্য এসেছে কোয়ার্টার কিংবা ফুলহাতা পোশাক। এ মৌসুমে দিনের বিভিন্ন সময়ে তাপমাত্রা বিভিন্ন রকম। দুপুরে গরম, সন্ধ্যায় শীতের আমেজ। এ দিকে খেয়াল রেখে মেয়েদের শাল বা চাদরেও এসেছে নতুনত্ব। যেমন চুমকির কাজ, মেশিন অ্যাম্ব্রয়ডারি, প্যাঁচওয়ার্ক ও কাতানের পাড়ের ব্যবহার। এসব শাল একটু খাটো। তাই দিনে ওড়না আর সন্ধ্যার পর শাল হিসেবে ব্যবহার করা যায়। ঋতুভেদে মেয়েদের পোশাকেও পরিবর্তন আনা হয়েছে। লং লেন্থের কামিজের সঙ্গে হাইনেক কলারের ব্যবহার করা হয়েছে। কুর্তায় বসছে শার্ট কলার। আর কলারের মাঝে বসানো হয়েছে ব্যান্ড বা প্লেট। এছাড়া লং লেন্থের পাঞ্জাবির কাটিংয়ে কুর্তিও এবারের শীত ফ্যাশনের সঙ্গে যোগ হয়েছে।
টিনএজার ছেলেদের শীত পোশাকের মধ্যে প্রথমেই ভাবনায় আসে সোয়েটার ও জ্যাকেট। এছাড়া কিছু কিছু পোশাকের সঙ্গে শীতের চাদরও বেশ মানিয়ে যায়। তবে বর্তমান স্টাইলিশ শীত পোশাক হিসেবে জ্যাকেটের চলটাই সবচেয়ে বেশি। বাংলাদেশে দেশীয় জ্যাকেটের পাশাপাশি দেখা মেলে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বিদেশী জ্যাকেট। জ্যাকেটের দাম ২ হাজার টাকা থেকে শুরু। মান ও কাপড়ের ওপর দামের তারতম্য রয়েছে। চামড়ার জ্যাকেটের দাম ৮ হাজার থেকে শুরু। খোঁজখবর নিলে এর চেয়ে কম দামেও পাওয়া যায়। বিভিন্ন ধরনের জ্যাকেটের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে হুডির জনপ্রিয়তা। গেঞ্জি কাপড় কিংবা ট্রাউজারের কাপড়ের মতো উপকরণ দিয়ে তৈরি এ হুডিগুলো শরীরের শীতনিবারণের পাশাপাশি থাকে স্টাইলিশ হুড, যা শীত থেকে রক্ষা করে মাথা ও কান। দাম ২০০ টাকা থেকে শুরু।
ছেলেদের স্টাইলিশ শীত পোশাক হিসেবে সোয়েটারের গুরুত্ব খানিকটা কম হলেও এর কদর এখনও কমেনি। তবে একেবারে বেসিক উল নিটেড সোয়েটারের চেয়ে মিক্স স্টাইলের সোয়েটারই বেশি চলছে। যেসব সোয়েটারে জ্যাকেটের মতো জিপার বা হুড আছে সেগুলোর চাহিদা বেশি। শীতের সময় জ্যাকেট কিংবা সোয়েটারের সঙ্গে নানা স্টাইলের জিন্সের চলটাই সবচেয়ে বেশি। ক্যাজুয়াল পরিবেশে জ্যাকেট বা সোয়েটার ছেলেদের সাজ পোশাকের সঙ্গে বেশ মানানসই।
 
লেখিকা পরিচিতি : মোসাম্মৎ সেলিনা হোসেনফ্রিল্যান্স সাংবাদিক, ঢাকা।