কিশোরবাংলাপ্রতিবেদন: দেশের মোট জনসংখ্যার ৪০ শতাংশ শিশু হওয়ার পরও তাদের জন্য গণমাধ্যম যথেষ্ট মানসম্মত কনটেন্ট দিতে পারছে না । দেশের জনসংখ্যার ৪০ শতাংশ শিশু যেহেতু দর্শক, সেহেতু মানসম্পন্ন অনুষ্ঠান বানাতে হবে । সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রবল জনপ্রিয়তার এই সময়ে শিশুদের ইন্টারনেটের বাইরে রাখা যাবে না। ফেইসবুকের আক্রমণে যাতে পাঠ্যবই হারিয়ে না যায়, সেজন্য তৈরি করতে হবে পর্যাপ্ত কনটেন্ট।
শিশু পরিস্থিতি উন্নয়নে মূল ভূমিকা নিতে হবে সরকারকেই । কিন্তু যে সব জায়গা থেকে এসব প্রশ্ন উঠতে দেখি আমরা, কিছু বেসরকারি সংস্থা, তাদের অর্থায়ন নিয়ে নৈতিকতার প্রশ্ন উঠতে দেখা যায়। তাহলে গণমাধ্যম কি তার কাজ সঠিকভাবে করছে না? শিশুদের বিষয়ে গণমাধ্যম যথেষ্ট সংবেদনশীল আচরণ করছে কি না, সেখানেও নজর রাখতে হবে।
প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আগে, শিশুদের বয়সের কথা মাথায় রেখে, তাদের বিষয়ে কথা বলার সময় গণমাধ্যম যথেষ্ট সংবেদনশীল আচরণ করছে কী না, কিংবা এ সংক্রান্ত বিধি ও প্রচলিত রীতি মানছে কী না- তার প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে ।শিশু বা শিশু অধিকারের বিষয়টিতে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।
২০১৪ সালের এক জরিপের মতে, বাংলাদেশের গণমাধ্যমে শিশুদের নিয়ে খবর থাকে মোট খবরের ৩ শতাংশের মত। আর শিশুদের অধিকার নিয়ে খবর হয় মাত্র এক শতাংশ।
নির্বাচনী ইশতেহারেও শিশুদের কথা আলাদাভাবে আসা উচিৎ । ইন্টারনেটে আমরা অনেক কিছু পাচ্ছি। বইয়ে যেগুলো নেই, ইন্টারনেটে সেগুলো গুগলে পাচ্ছি। টিভিতে যদি দেখি, সেটা উল্টা। শিশুদের নিয়ে প্রতিবেদন করার ক্ষেত্রে, তাদের গণমাধ্যমের সামনে আনার ক্ষেত্রে যতটা সংবেদনশীল হওয়া উচিৎ ।
গণমাধ্যমে শিশুদের দুটো ভাগ করে ফেলতে হবে। শিশু দর্শকদের জন্য গণমাধ্যম কী করতে পারে এটা একটা দিক। শিশুদের জন্য পৃথক গণমাধ্যমও হতে পারে।
আরেকটা দিক হল, জনসংখ্যার ৪০ শতাংশ শিশু, সেহেতু সকল কিছুতে শিশুদের দৃষ্টিভঙ্গির বিষয়টি আমাদের মাথায় রাখতে হবে। গণমাধ্যমে শিশুকে কীভাবে দেখাব, বহু কিছু বিবেচনা করতে হবে।
আগামী নির্বাচনে দলগুলোর ইশতেহারে শিশুদের জন্য আলাদা অধ্যায় রাখার প্রয়োজন বা সুযোগ আছে কি না- সে কথাও ভাবতে হবে ।
আমরা শিশুদেরকে শিশু হিসাবে দেখতে চাই না। অবহেলা হোক সেটাও চাই না। ভবিষ্যত হিসাবে গড়ে তুলতে চাই। এক্ষেত্রে সরকারের অনেক কিছু করার আছে। করতে না পারলে ভবিষ্যত নিয়ে প্রত্যাশা করাটাও ঠিক হবে না। যতটুকু করব, ঠিক ততটুকু প্রত্যাশা করব। শিশু আইন করাসহ শিশুদের জন্য শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও বিনোদনের ব্যবস্থা করার ওপর সরকারকে গুরুত্ব দিতে হবে ।