কিশোরবাংলাপ্রতিবেদন: স্কুলে যাওয়ার সময় এলেই অনেক শিশুর মধ্যে তীব্র আপত্তি, অনীহা ও উদ্বেগ লক্ষ করা যায়। কিন্তু যখন স্কুলে না যাবার দৃশ্যমান কোনো কারণ যেমন- শারীরিক অসুস্থতা ও পারিবারিক দুর্ঘটনা প্রভৃতি খুঁজে পাওয়া যায় না তখন বিষয়টি অভিভাবক ও স্কুলশিক্ষকের জন্য চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এটি শিশুদের একটি উদ্বেগজনিত মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা যা স্কুলভীতি নামে বেশি পরিচিত।
সাধারণত ৭-১১ বছর বয়সী শিশুর ক্ষেত্রে এ সমস্যা তীব্র আকার ধারণ করে। যে বয়সে একটি শিশুর স্বাধীনভাবে একাকী চলাফেরা, খেলাধুলা ও বন্ধুদের সাথে মেলামশার ক্ষমতা থাকার কথা তা যদি না থাকে তখন এ সমস্যা দেখা যায় যা ‘সেপারেশন অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডার’ নামক শিশু মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা নামে পরিচিত।
এ ছাড়া, স্কুলে যাওয়ার পথে ভীতিকর পরিবেশ, অতিরিক্তি পড়াশুনার চাপ, পরীক্ষা ভীতি, স্কুলে শিক্ষক বা সহপাঠী দ্বারা শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হওয়া এবং পরীক্ষায় খারাপ ফলাফল প্রভৃতি কারণেও শিশুদের স্কুলে যেতে অনীহা তৈরি হয়।
স্কুলভীতি স্কুল পরিবর্তন ও নতুন পরিবেশ, পরিবারে শৃঙ্খলার অভাব, মা-বাবার প্রতি শিশুর অতি নির্ভরশীলতা, শিশুর সাথে পরিবারের নেতিবাচক সম্পর্ক, শিশু নির্যাতন ও মা-বাবার মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার সাথে নিবিঢ়ভাবে সম্পর্কযুক্ত।
অনেক অভিভাবকরা স্কুলে যাবার সময় বাচ্চারা বিভিন্ন সমস্যা করে বলে ভয়ে, স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেয়। এটা আত্মঘাতী। তাতে করে যে কারণে এ সমস্যা তৈরি হয়, সে সমস্যা বাড়তেই থাকে।
প্রয়োজনীয় এবং সঠিক চিকিৎসার জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ, যেমন শিক্ষক এবং যারা শিশুটির সাথে সম্পর্ক রাখে তাদের সাথে পরিবারের মানুষের সাথে এক ধরনের কার্যকর সম্পর্ক দরকার হয়। দুপক্ষের বোঝাপরার মাধ্যমেই এই চিকিৎসা এগিয়ে নিয়ে যেতে হয়।
শিশুটিকে ধীরে ধীরে বিষয়গুলিতে অভ্যস্থ করে তুলতে হবে। ভিতরের কারণ খুঁজে বের করে, সেটির সঠিক চিকিৎসা করতে হবে। এনজিওলাইটিক অর্থাৎ টেনশান দূর করার ওষুধ ব্যবহার করতে হবে। যে অংশটুকু করতে পারবে, তার প্রশংসা করতে হবে।