কিশোরবাংলাপ্রতিবেদন: বহু শিশু বাসাবাড়িতে কাজ করতে এসে নির্মম শারীরিক নির্যাতন ও যৌন নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। নির্যাতনে অনেক সময় তাদের মৃত্যুও হচ্ছে। শিশুর সুরক্ষা নিশ্চিত হয়নি। গত জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত মাত্র চার মাসেই রাজধানীর বিভিন্ন বাসাবাড়ি থেকে শতাধিক গৃহকর্মীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এসব ঘটনায় মামলা হলেও আসামিদের কখনো সাজা হয় না। দারিদ্র্যের কারণে অনেক ক্ষেত্রেই মামলার বাদীরা নির্যাতনকারীদের সঙ্গে রফা করে মামলা তুলে নিতে বাধ্য হন।
জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদে শিশুর সর্বোত্তম স্বার্থ রক্ষায় ৫৪টি ধারার মধ্যে সরাসরি শিশুর সুরক্ষাবিষয়ক ২৪টি ধারা রয়েছে। ধারা ৩২-এর ১-এ বলা আছে, ‘শরীক রাষ্ট্রসমূহ অর্থনৈতিক শোষণ থেকে শিশুর অধিকারকে রক্ষা করবে এবং শিশুর শিক্ষায় ব্যাঘাত সৃষ্টিকারী কিংবা তার স্বাস্থ্য অথবা শারীরিক, মানসিক, আত্মিক, নৈতিক বা সামাজিক বিকাশের জন্য ক্ষতিকর কাজ করানো না হয়, সে ব্যবস্থা নেবে।’
এই শিশু অধিকার সনদে স্বাক্ষরকারী ১৯১টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। কিন্তু এখনো এ দেশে এই সনদের বাস্তবায়ন হয়নি। শিশুরা এখনো অরক্ষিত। দেশে শিশুদের জন্য আলাদা মন্ত্রণালয় এখনো গড়ে ওঠেনি।
জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদ অনুযায়ী বাংলাদেশের শিশুরা সুরক্ষা পাচ্ছে না কেন—এ প্রশ্নের জবাবে সাবেক মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ বলেন, ‘আসলে শিশুদের বিষয়গুলোতে আরও নজরদারি বাড়ানো প্রয়োজন। সরকার, পরিবারসহ সমাজের সব স্তরের মানুষকে এ ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। ঝুঁকিপূর্ণ কাজে শিশুদের নিয়োগ নিষিদ্ধ হলেও বহু শিশু ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করছে। ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত শিশুদের শারীরিক ও মানসিক দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতি হতে পারে। যেসব শিশু ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করছে, তাদের পরিবারকে আমরা নিষেধ করলেও শুনবে না। কারণ, সংসারে দরিদ্রতা আছে। আবার এসব শিশুর মা-বাবাকে যদি আমরা আইনের আওতায় নিয়ে আসতে চাই, তো তাদের ভরণপোষণের দায়িত্ব রাষ্ট্রকে নিতে হবে। সে ক্ষেত্রে রাষ্ট্র এখনো আর্থসামাজিকভাবে সুদৃঢ় অবস্থানে যায়নি।’