কিশোরবাংলাপ্রতিবেদন: ভাইরাস কিংবা ব্যাক্টেরিয়াজনিত সংক্রমণ হলে সাধারণত জ্বর হয়। জ্বর হল একটা প্রতিরক্ষাব্যবস্থা যা শিশুকে সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাহায্য করে। জ্বর যে কারণেই হোক, জ্বরের চিকিৎসা করা প্রয়োজন। জ্বরের চিকিৎসার সঙ্গে আসল রোগ নির্ণয় করে তার সঠিক চিকিৎসা করতে হবে। পাশাপাশি শিশুর সঠিক যত্ন নিতে হবে।
সঠিকভাবে তাপমাত্রা পরিমাপ: শরীরের তাপমাত্রা সারা দিন ওঠা-নামা করে। তাপমাত্রা সাধারণভাবে শেষ বিকালে বা সন্ধ্যার শুরুতে সবচেয়ে বেশি থাকে। সবচেয়ে কম থাকে সকালবেলা। বিভিন্ন অসুখে জ্বরের ওঠা-নামা বিভিন্ন রকম, তাই জ্বরের এই ওঠা-নামা লক্ষ্য করে সঠিক সময়ে তাপমাত্রা মাপা জরুরি। ব্যায়াম করলে এবং গরম খাবার বা পানীয় পান করলে তাপমাত্রার পরিবর্তন ঘটতে পারে। শিশু গরম দুধ বা পানীয় পান করে থাকলে তার ৩০ মিনিট পর তাপমাত্রা পরিমাপ করবেন।
শিশুকে হালকা পোশাক পরান: জ্বর হলেই ঠাণ্ডা লাগবে- এ ধারণাটা ঠিক নয়। তাই একগাদা কাপড় কাঁথা দিয়ে শিশুকে জড়িয়ে রাখা যাবে না। কারণ এতে জ্বর বাড়বে ছাড়া কমবে না।
শিশুকে স্পঞ্জবাথ করান: জ্বর কমানোর জন্য শিশুর শরীরে স্পঞ্জ করে দেয়া উচিত। স্পঞ্জ করার জন্য গরমকালে স্বাভাবিক পানি আর শীতকালে ঈষৎ উষ্ণ পানির ব্যবহার করা ভালো। বেশি ঠাণ্ডা পানি ব্যবহার না করাই ভালো, এতে শিশুর কাঁপুনি উঠে যেতে পারে। পানি শরীর থেকে বাষ্পীভূত হয়ে যাওয়ার সময় শরীরকে ঠাণ্ডা রাখে। এ ছাড়াও স্পঞ্জ করার পর দেহের লোমকূপগুলো খুলে যায় এবং সহজেই দেহের তাপমাত্রা বাইরে তাপমাত্রার সমান হতে চেষ্টা করে, যার ফলে জ্বর কমে যায়।
শিশুকে প্রচুর তরল খাওয়ান: জ্বরের সময় সাধারণত শিশুরা খেতে চায় না। অনেকে শুধু পানি খেতে চায়, অনেকে আবার তাও খেতে চায় না। খাবার সামনে আনলে বলে এটা নয়, ওটা খাব। অনেক সময় নতুন নতুন খাবারের বায়না ধরে। তা দিলেও খেতে চায় না। এ সবই অসুস্থ শিশুর জন্য স্বাভাবিক। যাই হোক না কেন, তাকে যে করেই হোক পানি বা অন্য কোনো তরল খাবার খাওয়াতে হবে।
জ্বর ও খিঁচুনি: জ্বরের সঙ্গে খিঁচুনি অল্প বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে প্রায়ই দেখা যায়। এই খিঁচুনি বেশিক্ষণ স্থায়ী হলে মস্তিষ্কের ক্ষতিসাধন হতে পারে। এ ক্ষেত্রে শিশুর শরীরের তাপমাত্রা ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইটের ওপরে থাকবে। খিঁচুনির সময়কাল কয়েক সেকেন্ড থেকে কয়েক মিনিট পর্যন্ত হতে পারে। সাধারণত ১০-১৫ মিনিটের বেশি স্থায়ী হয় না। পরিবারের অন্য কেউ শৈশবে এ রোগে ভুগলে সেই পরিবারের শিশুরও খিঁচুনি হওয়ার আশংকা থাকে। প্রথম খিঁচুনির পর ১৮ থেকে ২৪ ঘণ্টা পর পরবর্তী খিঁচুনি হতেও পারে নাও হতে পারে। এটা জ্বরের ওপর নির্ভর করবে। জ্বরের সঙ্গে খিঁচুনি হলে বিন্দুমাত্র দেরি না করে শিশুকে জরুরিভিত্তিতে নিকটবর্তী হাসপাতালে বা শিশু বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যাবেন। বাসায় রেখে অযথা সময় নষ্ট করলে শিশুর সমূহ ক্ষতি হতে পারে। এমনকি শিশুর মৃত্যু হতে পারে।