কিশোরবাংলাপ্রতিবেদন: বেদে সম্প্রদায়ের শিক্ষা বঞ্চিত শিশুরা আদি যুগের মতো আজও পরিবারের সদস্যদের সাথে যাযাবর জীবন কাটায়। এতে শিক্ষা গ্রহনের মৌলিক অধিকার থেকে আজও বঞ্চিত হচ্ছে ওরা।
তারা নদীর তীরে বিভিন্ন হাট বাজার অথবা নৌবন্দর এলাকায় ঘাটি গেঁড়ে নৌকার ছৈয়ের নিচেই রাত কাটাতো। এখন আগের মত নদী নালা ও খাল-বিলে পানি থাকেনা। তাই বেদেরা এখন নৌকার ছৈয়ের মত ডেরা করে কোন নদী বা খালের ধারে একেক সময় একেক জায়গায় দলবেঁধে আশ্রয় নেয়। বেদে শিশুদের আজও লেখাপড়ার বদলে সাপের খেলা শেখায় তাদের বাবা মায়েরা।
ওরা সকলেই শিক্ষার সুযোগ বঞ্চিত। বেদে পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলে জানাগেছে, বেদে সম্প্রদায়ের শিশুরা বেঁদে বহরের চারপাশে দুরন্তপনায় মেতে থাকে। কেহ সাপ নিয়ে খেলা করে। অনেকেই আবার বেঁদে বহরের চারপাশে কানামাছি, বউচি, বন্দিভাষা, কুতকুত ও এক্কাদোক্কা খেলে কাটায় সারাবেলা। অনেকেই আবার হাটে বাজারে সাপ ও বাদর খেলায় তাদের বাবা মাকে সহযোগীতা করে।
এভাবেই বেঁদে সম্প্রদায়ের শিশুরা মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে সাপ বাদর খেলার মতো ভয়ংকর পেশায় জড়িয়ে পড়ছে। বেড়ে উঠছে অশিক্ষা কুশিক্ষায়। শিক্ষা বলতে জানে সাপ ও বাদর খেলা শেখা। বেঁদে বহরে আজো পৌছেনি শিক্ষার আলো। পরিচয় হয়নি অক্ষর জ্ঞানের সাথে। ফলে এরা নিরক্ষরই থেকে যাচ্ছে বংশ পরম্পরায়। যাযাবর জীবনে একেক সময় একেক স্থানে অবস্থান নেয়ায় শিক্ষা গ্রহনের সুযোগ নেই শিশুদের। অ আ ও ক খ এবং স্কুল দেখতে কেমন সেখানে কি হয় তাও জানেনা এসব শিশুরা।
জাতিসংঘের শিশু অধিকার ও জাতীয় শিশু সনদ নীতিমালা অনুযায়ী প্রত্যেক শিশুই রাষ্ট্র কর্তৃক লেখাপড়ার সুযোগ পাবে। র্দুভাগ্য, এটি কার্যকর না থাকায় বেদে শিশুদের মতো দেশের অসংখ্য শিশু শিক্ষার বাইরে থেকে যাচ্ছে। তারা খন্ডকালিন শিক্ষা গ্রহনের সুযোগ পেলেও এক পর্যায়ে চলে আসতে পারে মুলধারার শিক্ষা ব্যবস্থায়। সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে ভুমিকা রাখতে পারে দেশ গঠনে। তাই প্রতিটি জেলা ও উপজেলা প্রশাসন থেকে বেদেদের শিক্ষার ব্যবস্থা করা এখন সময়ের দাবী।