বিশ্বে ১২ কোটি শিশু-কিশোর স্থূল
কিশোর বাংলা প্রতিবেদন: গত চার দশকে সারা বিশ্বে শিশু–কিশোরদের মধ্যে স্থূলতার হার বেড়েছে ১০ গুণ। বর্তমানে বিশ্বের প্রায় সাড়ে ১২ কোটি শিশু-কিশোরের ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রভাবশালী জনস্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সাময়িকী ল্যানসেটের নতুন এক গবেষণায় এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে। আজ বুধবার বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে ওই গবেষণার বরাত দিয়ে এ তথ্য জানানো হয়। বিশ্বের ২০০টি দেশের ওপর এই গবেষণা চালানো হয়।
এই স্থূল শিশু–কিশোরেরা বড় হয়েও স্থূলই থেকে যাচ্ছে। স্থূল হওয়ার কারণে নানা ধরনের শারীরিক সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে তারা।
বিশ্ব স্থূলতা দিবসে উপলক্ষে প্রকাশিত ওই গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২৫ সালের পর থেকে প্রতিবছর বিশ্বে স্থূলতার কারণে তৈরি অসুস্থতার চিকিৎসায় ব্যয়ের পরিমাণ হবে ৯২ হাজার কোটি পাউন্ড।
গবেষণায় দেখা গেছে, পূর্ব এশিয়ায় দিন দিন বাড়ছে স্থূল শিশু ও কিশোরের সংখ্যা। বিশেষ করে চীন ও ভারতে।
আর প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ রাষ্ট্র পলিনেশিয়া এবং মাইক্রোনেশিয়ায় এই হার সবচেয়ে বেশি। দেখা গেছে সেখানকার তরুণ জনগোষ্ঠীর প্রায় অর্ধেকই স্থূল। গবেষকেরা দেখেছেন বর্তমান এই অবস্থা চলতে থাকলে স্থূলতা খুব সাধারণ বিষয়ে পরিণত হবে।
মূলত ২০০০ সালের পর থেকে বিশ্বে কম ওজনের শিশু–কিশোরের সংখ্যা কমতে শুরু করে। গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১৬ সালে বিশ্বে ১৯ কোটি ২০ লাখ শিশু কম ওজনের ছিল। যদিও এ সংখ্যা এখনো স্থূলতার চেয়ে বেশি, তবে উল্লেখযোগ্য হারে এই ব্যবধান কমছে। কয়েক দশকের মধ্যে পূর্ব এশিয়া, ল্যাটিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলে কম ওজনের চেয়ে স্থূল মানুষের সংখ্যা বাড়বে।
তবে স্থূলতার হারের দিক দিয়ে উচ্চ আয়ের ইউরোপীয় দেশগুলোর অবস্থা অনেকটা স্থিতিশীল। যেমন যুক্তরাজ্যে প্রতি ১০ জনের মধ্যে একজন স্থূল।
লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিনের গবেষক হ্যারি রাটার বলেন, ‘এটি একটি বড় সমস্যা, যা দিন দিন বাড়ছে। ১০ বছর আগের যে মানুষগুলো কম ওজনের ছিল, তাদের ওজন এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি। এটার কারণ এমন নয় যে আমরা বেশি খাচ্ছি বা লোভী হয়ে যাচ্ছি। বাস্তবতা হচ্ছে, আমাদের চারপাশের বিশ্ব পরিবেশ পাল্টেছে।’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ড. ফিওনা বুল বলেন, অধিক ক্যালরিযুক্ত ও পুষ্টিহীন খাদ্যের বিপরীতে কঠিন কর্মসূচি নিচ্ছে তাদের সংস্থা। জোর দেওয়া হচ্ছে শারীরিক পরিশ্রমের ওপর।