প্রতিবন্ধী শিশুদের মা-বাবার মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা

কিশোর বাংলা প্রতিবেদন: প্রতিবন্ধী শিশুদের মা-বাবার মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টি এখনো অবহেলিত। অনেক সময় প্রতিবন্ধী শিশুর মা-বাবারা উদ্বেগ, বিষন্নতার মতো মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভোগেন।
আমাদের দেশে প্রায় ১০ ভাগ শিশু প্রতিবন্ধী। গবেষণার মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে যে তাদের যদি মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক থাকে, তারা শিশুদের ভালো সেবা দিতে পারে। আমাদের দেশে যেসব শিশুরা প্রতিবন্ধী রয়েছে, তাদের বাবা-মায়ের মানসিক বিষয়টি এখনো অবহেলিত বলে আমি মনে করি।
যখনই একটি শিশু জন্মগ্রহণ করে, মা-বাবার একটি প্রত্যাশা থাকে যে সুস্থ-সবল শিশু জন্ম হবে। যখনই এই শিশুটা একটু ব্যতিক্রম হয়, তখনই পরিবার থেকে শুরু করে কর্মক্ষেত্রে সব মা-বাবারা বিভিন্ন ধরনের নির্যাতন, সামাজিক বিভিন্ন কুসংস্কার, সেগুলো মা-বাবার ওপর চলে আসে। মা-বাবার মধ্যে পারিবারিকভাবে দোষারোপের একটি বিষয় চলে আসে। অনেক ধরনের কুসংস্কার পরিবারের ওপর, মা-বাবার ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়।
প্রায় সকল দোষারোপটা মায়ের ওপর চলে আসে। তখন মা একটি বিষণ্ণতায় পড়ে যান। বাবাও অনেক সময় মাকে দোষারোপ করেন। দেখা যায় পরে তাঁরা সন্তান নিতে ভয় পান। পরের সন্তানটি আবার প্রতিবন্ধী হবেন কি না সেই ভয়ের মধ্যে তাঁরা থাকেন। সামাজিক চাপ অনুভব করেন।
আরেকটি হলো সহযোগিতার অভাব। পারিবারিক সামাজিক একটি সহযোগিতার অভাব দেখা যায়। এই ক্ষেত্রে তারা হতাশ হয়ে যান। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, যেসব ছেলেমেয়েরা প্রতিবন্ধী, তাদের মা-বাবার মধ্যে বিষণ্ণতা, উদ্বেগের মতো মানসিক অসুস্থতা দেখা দেয়।
যখন শিশুটি তীব্র প্রতিবন্ধী হয়, তখন মা-বাবা যদি কোথাও ঘুরতে যেতে চান, বেড়াতে যেতে চান, সেই সুযোগটাও কিন্তু তাদের হয় না। কারণ, ওই সন্তানকে তিনি কোথায় নিরাপদে রাখবেন, সে রকম সামাজিক, রাষ্ট্রীয় কাঠামো নেই। ওই সন্তানকে কিছু সময়ের জন্য যদি নিরাপদভাবে রাখা যেত, উন্নত বিশ্ব যেগুলো অনুসরণ করে, তাহলেও কিন্তু তাঁরা তাঁদের নিজেদের মানসিক স্বাস্থ্যসেবা করতে পারতেন, তাহলে তাঁদের চাপ নিরসন করা যেত।
যদিও সরকার এ বিষয়ে যথেষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। এরপর যেটি হচ্ছে সেটি হলো এরকম বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠান আমাদের দেশে নেই যেখানে মা-বাবা তাঁদের সন্তানকে একটু রেখে নিজেদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তা করবেন।