কিশোর জগৎ আজ ভয়ংকর রূপ নিয়েছে

কিশোর বাংলা প্রতিবেদন: কিশোর অপরাধ বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে অন্যতম মাথাব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিশোর জগৎ আজ ভয়ংকর রূপ নিয়েছে। তাছাড়া পারিবারিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটও তাদের অপরাধপ্রবণ করে তোলে। যে বয়সে তাদের লেখাপড়া নিয়ে ব্যস্ত থাকার কথা, সেই বয়সে তারা হারিয়ে যেতে বসেছে নানা অপরাধমূলক কাজে। বিভিন্ন গবেষণায় এসেছে, ১৪ থেকে ১৬ বছর বয়সীরা অপরাধে বেশি জড়াচ্ছে।
দেশের দুই কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, সেখানে থাকা কিশোরদের ২০ শতাংশ খুনের মামলার আর ২৪ শতাংশ নারী ও শিশু নির্যাতন মামলার আসামি। নারী ও শিশু নির্যাতন মামলাগুলোর বেশির ভাগই ধর্ষণের অভিযোগে করা।
বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে আসা এসব কিশোরের মধ্যে দরিদ্র পরিবারের সন্তান যেমন আছে, তেমনি আছে মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তানও। তাদের অনেকে মাদকাসক্তও হয়ে পড়ছে। তাদর অবস্হা ভয়ংকর।
বাংলাদেশের ২০১৩ সালের শিশু আইন অনুযায়ী, ৯ থেকে অনূর্ধ্ব ১৮ বছরের কোনো ছেলেশিশু অপরাধে জড়ালে তাদের গাজীপুরের টঙ্গী ও যশোরের পুলেরহাটের কিশোর (বালক) উন্নয়ন কেন্দ্রে রাখা হয়। এই দুটি কেন্দ্র থেকে সমাজসেবা অধিদফতরের সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্য পাঠানো হয় গত ৩১ ডিসেম্বর। ওই দিন কেন্দ্র দুটিতে ছিল ৫৯৭ জন কিশোর। তাদের মধ্যে ১২০ জন ভয়ংকর হত্যা মামলার আসামি। ১৪২ জন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে করা মামলা এবং ৯ জন তথ্যপ্রযুক্তি ও পর্নোগ্রাফি আইনে করা মামলার আসামি।
এর বাইরে চুরির মামলায় ৮৯, ডাকাতি ১৬, ছিনতাই ৬, মাদক মামলায় ৬৬, অস্ত্র মামলায় ২০ ও বিস্ফোরক মামলায় আছে ৫ জন। অন্যরা সাধারণ ডায়েরিসহ বিভিন্ন মামলার আসামি।
অপরাধ ও সমাজ বিশ্লেষকেরা বলছেন, আর্থসামাজিক অবস্থার পরিবর্তন, আকাশ সংস্কৃতি ও ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা বা তথ্যপ্রযুক্তি কিশোরদের অপরাধপ্রবণতা বাড়ার অন্যতম কারণ।