কিশোর- কিশোরীদের জন্য শীতের বাহারি পোশাক

কিশোর বাংলা প্রতিবেদন : শীত যেন আসি আসি করছে। ক’দিন পরে জেঁকে বসবে শীত। তাই এই কনকনে শীতকে উপভোগ করতে ফ্যাশন হাউসগুলোতে ক্রেতার ভীড় জমছে। সেই সঙ্গে কদর বাড়ছে ভারী পোশাকের। বড়দের সঙ্গে সঙ্গে শিশু ও কিশোর- কিশোরীদের জন্যও শীতের বাহারি পোশাকে বাজারের দোকানগুলো সেজে ওঠেছে নতুন আঙ্গিকে। প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন- মোসাম্মৎ সেলিনা হোসেন
শীতকে তাড়িয়ে তাড়িয়ে আয়েশ করে উপভোগ করার পাশাপাশি নগর জীবনের সচ্ছল মানুষের জন্য তথা তরুণ-তরুণীদের জন্যে বিশেষ আয়োজনও লক্ষ্যণীয় বিষয়। ঢাকার প্রতিষ্ঠিত ফ্যাশন হাউসগুলো শীতের আগে থেকেই নতুন ডিজাইনের ফ্যাশনেবল গরম কাপড়ের পোশাক তৈরির প্রস্তুতি শুরু করে দেয়।
আউটলেটগুলোতে তরুণদের জন্য ব্লেজার, ফুলস্লিভ কটনের ডিজাইনকৃত গেঞ্জি, স্যুয়েটার, জ্যাকেট, জিন্স-কর্ডের শার্ট প্রভৃতি আর তরুণীদের জন্য শাল, কার্ডিগান, ফিমেল স্যুয়েটারসহ নানা আঙ্গিকের গরম কাপড়ের পোশাক সংগ্রহের ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া বঙ্গবাজার, গুলিস্তান, বঙ্গবন্ধু এ্যাভেনিউ, বায়তুল মোকাররম, মতিঝিল, নয়াপল্টন, ফুলবাড়িয়া, নিউমার্কেটসহ ঢাকার বিভিন্ন ফুটপাথ থেকেও গরম কাপড় সংগ্রহ করা যায় প্রতি শীতেই যেহেতু সব বয়সের মানুষেরই গরম কাপড় অপরিহার্য হয়ে ওঠে শীতে-তাই সাদামাটা গরম কাপড়ের পাশাপাশি ফ্যাশনেবল শীতের পোশাকও অনেকেই পরিধান করেন স্ব-স্ব পছন্দ অনুযায়ী।
নগরজীবনের এই ছবিটার সঙ্গে মফস্বল শহরের ছবিটাও যেন একটু মিলে যায়। কিন্তু গ্রামগঞ্জের শীতের রূপটা যেন আরও প্রাকৃতিক একটু অসচ্ছলও। নগর জীবন শীতটাকে পৌষ মানানো গেলেও গ্রামের শীতের তীব্রতা গ্রামীণ জনপদে হানা দেয় আরও তীব্রতা নিয়ে। পাতলা কাঁথা, সাধারণ চাদর আর ছেঁড়াখোঁড়া কম্বলে গ্রামের শীত যেন বাগে আসতেই চায় না। আর তাই গ্রামের শীতার্ত মানুষ কুয়াশাভরা আর সন্ধ্যায় ক্ষেতের কিনারে মাঠে, বাড়ির উঠোনে নাড়ার আগুন জ্বেলে সমবেত ভাবে আগুনের উত্তাপ গ্রহণ করে।

This slideshow requires JavaScript.

তা শীতে কখনও কখনও দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। বিশেষ করে শিশু আর বয়স্ক নারী-পুরুষরা শীতে নিদারুণ কষ্ট ভোগ করে। যদিও শীতের স্থায়িত্বকাল খুব দীর্ঘ নয়। তারপরও শীত এলে একদিকে যেমন নতুন আমেজ, আন্দদের রেশ বেজে ওঠে। তেমনি জনজীবনে শীতের আবহ নাজুক প্রেক্ষিত ও রচনা করে দেয়। সবমিলিয়ে শীতে মানুষের মধ্যে এক মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়- যার সঙ্গে এই বাংলার প্রতিটি মানুষই পরিচিত।
শীতে বেড়ানো, মেলা যাত্রাপালা প্রভৃতি শীতে প্রকৃতি রুক্ষ আর পথঘাট ধুলায় আচ্ছন্ন হয়ে থাকলেও এই সব কিছু যেন মিলিয়ে যায় শীতের নানা উৎসব আয়োজনের অতলে। বিশেষ করে শীতেই গ্রামগঞ্জে উন্মুক্ত মেলা উৎসব শুরু হয়। সে সব মেলায় বাউল, কবিগানের আসর, যাত্রাপালা, পুতুল নাচ, মুড়ি-মুড়কি, বাতাসা, খৈ, মুরলি, সন্দেশ আর ঢোল-বাদ্যি, আড়বাঁশির শব্দ আর মানুষের কোলাহল যেন শীতের সঙ্গে এক স–সুতোয় বাঁধা।
গ্রামের শীত আনন্দ- নগর জীবনে একেবারেই অনুপস্থিত। হলুদ শর্ষে ফুলের শিশির ভেজা ঘ্রাণ প্রান্তর ছাপিয়ে গিয়ে যেন জীবনের প্রতিটি শীত মানুষঙ্গকে উদ্বেলিত করে তোলে। করে তোলে উৎসবমুখী।
অন্যান্য সময়ের চেয়ে শীতে বেড়ানোটাও খুব মজার। ঝড়- বাদলের আশঙ্কামুক্ত শীত ঋতুতে তাই অনেকেই ভ্রমণের উদ্দেশ্যে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে পড়ে। শীতে যেমন একটু উষ্ণততার ছোঁয়া পেতে সকলেই উন্মুখ হয়ে ওঠে-তেমনি নতুন চালের ভাঁপা পিঠা, পুলি, পাটি সাপটা, ক্ষীর-পায়েস। আর খেজুরের গুড়ের সুস্বাদু সুগন্ধিতে সিক্ত হয়ে উঠে শীতের প্রতিটি সকাল-দুপুর।
লেখিকা : মোসাম্মৎ সেলিনা হোসেন, ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক, ঢাকা।