কিশোর-কিশোরীদের মৃত্যুর বড় কারণ বিষণ্ণতা

কিশোর বাংলা প্রতিবেদন: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা ডাব্লিউএইচও-র সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমান বিশ্বে ১০ থেকে ১৯ বছর বয়সিদের বড় একটা অংশের অসুস্থতার অন্যতম কারণ বিষণ্ণতা৷ অনেক কিশোর-কিশোরীই বয়ঃসন্ধিকালে শুরু হওয়া মানসিক অসুস্থতা বয়ে বেড়ায় জীবনভর৷ সারা বিশ্বের মানসিকভাবে অসুস্থ প্রাপ্তবয়স্কদের অন্তত অর্ধেকের মাঝে এই রোগের লক্ষণ দেখা গিয়েছিল বয়স ১৪ পূর্ণ হওয়ার আগে৷ ডাব্লিউএইচও-র পরিবার, নারী এবং শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান ফ্লাভিয়া বুস্ত্রেও বলেন, ‘‘কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থের প্রতি বিশ্ব যথেষ্ট মনযোগ দেয়নি৷ মানসিক সমস্যাগ্রস্থ এই কিশোর-কিশোরীদের ঠিকভাবে যত্ন নিলে অনেকের মৃত্যু এবং জীবনভর ভোগান্তির হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব৷”
বর্তমান যুগে চাকরিতে নানা সমস্যা, সংসার, সন্তান, পরিবেশ সবকিছু মিলিয়ে জীবনটা যেন যান্ত্রিক হয়ে যাচ্ছে৷ যার ফলে স্ট্রেস বা মানসিক চাপের শেষ নেই৷ তাই শরীর এবং মন একসাথে সুস্থ রাখা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ এই চাপের কারণে মানুষের ভেতর বাড়ছে অস্থিরতা৷ আর এই অস্থিরতাকে যেন কিছুটা কমানো যায় এবং পুরোপুরি ভালো বোধ করা যায়, তার জন্য প্রয়োজন ওয়েলনেস৷
জাতিসংঘের একটি সংস্থা বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে প্রকাশিত তথ্য সংগ্রহ করে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে৷ কৈশোর এবং যৌবনের মধ্যবর্তী বয়সিদের ধূমপান, মদ্যপান, মাদক সেবন, এইচআইভি সংক্রমণ, পুষ্টিহীনতা, যৌনতা, মানসিক স্বাস্থ্য এবং সহিংসতাসহ বেশ কিছু বিষয়ের তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে এই প্রতিবেদনে৷ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের উচ্চ আয় সম্পন্ন দেশগুলোতেই কিশোর-কিশোরীদের মানসিক সমস্যাজনিত রোগ এবং মৃত্যুর হার বেশি৷
মানসিক স্বাস্থ্যের ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে সচেতনতা প্রয়োজন অনুযায়ী না বাড়লেও অন্তঃসত্ত্বা কিশোরীদের প্রতি মনযোগ বেড়েছে৷ অন্তঃসত্ত্বা হবার পর এবং সন্তান জন্ম দেয়ার সময় মৃত্যুর হার গত চার বছরে উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে৷ এ উন্নতি অবশ্য সন্তোষজনক নয়৷ সারা বিশ্বে এখনো সন্তান জন্ম দেয়ার সময়ই সব চেয়ে বেশি কিশোরী মারা যায়৷ নানা কারণে আত্মহননের পথও বেছে নেয় কিশোর-কিশোরীরা৷ ডাব্লিউএইচও-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, বয়ঃসন্ধিকালে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর কারণ প্রসবকালীন জটিলতা, আর তারপরই রয়েছে আত্মহত্যা৷